মেডিটেশন কি ? মেডিটেশন কিভাবে করতে হয় ?? মেডিটেশনের উপকারিতা কি কি ?? Meditation bangla

 মেডিটেশন কি ? মেডিটেশন কিভাবে করতে হয় ?? মেডিটেশনের উপকারিতা কি কি ?? Meditation bangla..






আজকের এই পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী হতে চলেছে। কারণ, আজকে আমি এমন কিছু বলবো, মেডিটেশনের শক্তি পাওয়ার তোমাদের সামনে তুলে ধরবো , যা ব্যবহার করে নিজের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা শক্তিকে জাগ্রত করে সমস্ত কিছু জয় করতে পারো । এই মেডিটেশন অর্থাৎ ধ্যান হাজার হাজার বছর ধরে সাধু-সন্ন্যাসীরা করে আসছে। কিন্তু এর সঠিক পদ্ধতি এবং উপকারিতা আজও অনেকের কাছে অজানা! কিন্তু চিন্তা নেই, আমি তো রয়েছি। তোমাদের এই পোস্টটির মাধ্যমে মেডিটেশনের সমস্ত দিক তুলে ধরবো, তাই সবাই পোস্টটি ছেড়ে কোথাও যেও না । পোস্টটি শেষ অব্দি অবশ্যই দেখো, পোস্টটি শেষ অব্দি দেখে তোমরা বুঝতে পারবে তোমাদের আমি এটা কি শেয়ার করলাম ।  


প্রথমে আমরা জানবো কি এই মেডিটেশন ? এটা করলে কি হয় ? এটার উপকারিতা এবং শেষে এটা করার সঠিক পদ্ধতি। 


 মেডিটেশন অর্থাৎ ধ্যান হলো,এমন একটি টেকনিক যা প্রাক্টিস করে নিজের মনকে মানসিকভাবে পরিষ্কার এবং শান্ত করা সম্ভব । মাইন্ড পাওয়ার বৃদ্ধি করে সাবকনসাস লেভেলে নিজের মনকে নিয়ে যাওয়া । যত প্র্যাকটিস্ করবে তত আমাদের মাইন্ড পাওয়ারফুল হবে । এর উপকারিতা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এর কথা ! 

বেশিরভাগ মানুষ মেডিটেশন করে তাদের দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ কমানোর জন্য। জব, কেরিয়ার, বিজনেস টেনশন, স্টাডি প্রেসার ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে আমাদের মানসিক চাপ অনুভব হলে আমাদের শরীরে স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ বাড়তে থাকে, ফলস্বরূপ আমাদের ঘুম কমে যায়, ডিপ্রেশন বাড়তে থাকে, ব্লাড প্রেসার দিনে দিনে বাড়তে থাকে আমরা ঠিকভাবে পজেটিভ কিছু ভাবতে পারিনা অলওয়েজ নেগেটিভ ভাবনাচিন্তা আমাদের মাথায় আসে। মেডিটেশন ব্যবহার করে সেই সমস্ত প্রবলেম দূর করা সম্ভব। এছাড়া এটা আমাদের চিন্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ করে, আত্মসচেতনতা বৃদ্ধি করে, কাজে অথবা পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধি করে , স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, বিভিন্ন অ্যাডিকশন অথবা আসক্তি থেকে আমাদের মুক্ত করে । ব্লাড প্রেসার ঠিক রাখে আরোও অনেক অনেক উপকারিতা রয়েছে। অনেকে হয়তো ভাবছো দূর এসব করো নিজের সময় কেন নষ্ট করবো ? এর থেকে অন্য কিছু করি তাহলে সেটা হবে তোমাদের মুর্খামি ! তোমরা গৌতম বুদ্ধের কথা নিশ্চয়ই শুনেছো , তিনি এই মেডিটেশন করেই একজন এনলাইটেন মহাপুরুষ হতে পেরেছেন । তিনি বলেন , মেডিটেশনের ফলেই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের এনার্জি অনুভব করতে পারবে, তোমার মধ্যে প্রবেশ করবে, আসল হ্যাপিনেসের চাবিকাঠিই হলো এই মেডিটেশন । প্রতিদিন অন্তত 5 অথবা 10 মিনিট সময় রাখো মেডিটেশন করার জন্য আশা করছি এতে তোমাদের সময় নষ্ট হবে না। এতটুকু সময় তো দেওয়াই যায় তাইনা ।


কিন্তু প্রশ্ন হলো মেডিটেশন কখন করবো ? মেডিটেশন করার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। যখন তোমরা সময় পাবে তখন করবে । তবে দিনের শুরুটা অর্থাৎ ভোরবেলা মেডিটেশন করার চেষ্টা করো কারণ এর ফলে আমাদের মাইন্ড সারাদিন ফ্রেশ থাকবে। ফলে কাজে ভালো ফোকাস করতে পারবে আর যারা স্টুডেন্ট তারা অবশ্যই স্টাডি শুরু করার আগে এটা করবে। এতে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়বে।


 এখন বলবো মেডিটেশন বা ধ্যান করার সঠিক পদ্ধতি? মেডিটেশন করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে । তার মধ্যে থেকে আমি কিছু পদ্ধতি শেয়ার করবো যা সহজেই সবাই শিখতে পারো । তবে তার আগে বলবো মেডিটেশন করার সময় কিভাবে বসতে হয় এবং কোথায় বসতে হয়। মেডিটেশন করার সময় প্রথম যেটা মাথায় রাখতে হবে , সেটা হলো সিটিং পসিশন তুমি যেকোনো পজিসনে বসতে পারো, শুধু খেয়াল রাখবে সেটা যেন কম্ফোর্টেবল এবং স্টেবল হয়। আমরা মেঝেতে বসে অথবা চেয়ারে যেকোনো জায়গায় বসে মেডিটেশন করতে পারি। শুধু সেই জায়গায় বসলে আমরা যেন কম্ফোর্টেবল ফিল করি এটাই মাথায় রাখতে হবে ‌। তোমরা পা, হাঁটু মুড়ে বসো , দুই হাতের আঙ্গুল একসাথে আরামদায়কভাবে ধরে বসো , এবং শ্বাস নেও যাস্ট রিলাক্স ফিল করো । যখন আমরা পা ভাজ করে এবং দুই হাতের আঙ্গুল মাঝে রেখে ধরে বসি তখন এনার্জি আমাদের কেন্দ্রে চলে আসে এবং কেন্দ্র থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এবার চোখ বন্ধ করো কারণ চোখ হলো আমাদের মাইন্ডের দরজা। যখনই আমরা চোখ বন্ধ করে বসবো তখন বিভিন্ন চিন্তা মাথায় আসবে। বিভিন্ন প্রশ্ন ? সেটা জানা বা অজানা। কথা বলা, চিন্তা করার সমস্ত কিছু বন্ধ করে দেও। যাস্ট রিলাক্স করো, অনুভব করো তুমি যে শ্বাস নিচ্ছো এবং ছাড়ছো। কনসাসলি শ্বাস নেবে না, চেষ্টা করো নিজে নিজেই যেন শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়া হয়। তুমি শুধু সেটাকে ফিল করো , অনুভব করো । যখন আমরা রিলাক্স হয়ে বসি তখন কনসাসনেস ট্রাভেল করে নেক্সট জন মাইন্ড এবং ইন্টাল্যাক্ট , এইভাবে আমরা "No Thought"লেভেলে পৌঁছাতে পারলে , আমরা মেডিটেশনের মেডিটেটিভ স্টেটে পৌঁছাতে পারবো। এই সময়ে কসমিক এনার্জি আমাদের মাইন্ডে প্রবেশ করতে থাকবে এই এনার্জি আমাদের পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হবো, আমাদের কনন্সেন্ট্রেশন পাওয়ার বাড়বে আমাদের মাইন্ড আগের তুলনায় অনেক অনেক পাওয়ারফুল হবে। সাবকনসাস মাইন্ড পাওয়ার সম্পর্কে কারো অজানা নয় এই পাওয়ার ব্যবহার করে আমরা যা চাই তাই করতে পারি । মেডিটেশন করে সাবকনসাস মাইন্ডের পাওয়ার বৃদ্ধি করতে পারি। আমরা যখন আরামদায়কভবে বসে মেডিটেশন করবো তখন আগে বলেছিলাম সমস্ত চিন্তা বন্ধ করে রিলাক্স ভাবে বসতে হবে। সেটা করার পর আমরা "No Thought" লেভেলে যাওয়ার পর আমাদের শুধু একটা জিনিসের উপর ভিজুয়ালাইজ করতে হবে। শুধু সেই জিনিস যেটা আমরা চাই , সেই পিকচারের উপর শুধু ভিজুয়ালাইজ করো। কোনো চিন্তা না, কোনো অ্যাফারমেশন না , শুধু ভিজুয়ালাইজেশন এর ফলে আমাদের সাবকনসাস মাইন্ড সেই জিনিসটাকে আমাদের কাছে নিয়ে আসার জন্য আরও অনেক পাওয়ারফুল হবে। তবে তোমরা যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকো আমি সাজেস্ট করবো পড়তে বসার আগে অন্তত পাঁচ মিনিট মেডিটেশন করার সময় কোন কিছু ভিসুয়ালাইজ করবে না । শুধু রিলাক্স করো "No Thought" লেভেলে নিয়ে যাও নিজেদেরকে তাহলে মাইন্ড ফ্রেশ হবে । স্টাডি ভালো করে করতে পারবে ‌।


বন্ধুরা আশা করছি আমার এই পোস্টটি তোমাদের অনেক উপকারে আসবে । তোমরা রোজ চেষ্টা করবে মেডিটেশন প্রাক্টিস করার ,একদিন ও বাদ দেবে না। যখন প্রথম প্রথম প্র্যাকটিস্ করবে তখন বিভিন্ন চিন্তা মাথায় আসবে, ধীরে ধীরে সে চিন্তা দূর করতে হবে , চেষ্টা এবং প্র্যাকটিস এর ফলে সমস্ত কিছু সম্ভব। মেডিটেশনের উপকারিতা শুনলে, সঠিক পদ্ধতি ও জানলে , কিভাবে মেডিটেশনের ফলে সাবকনসাস মাইন্ডের পাওয়ার বৃদ্ধি করবে তাও জানলে, এবারও কি তাহলে বলবে এই মেডিটেশন আমার জন্য না !! আমি কাউকে জোর করবো না , আমার কাজ তোমাদের উপকারী ইনফরমেশন শেয়ার করা সেটা আমি করেছি। এবার তোমরাই ডিসাইড করো তোমরা এটা নিয়ে নিজেদের লাইফ নতুন করে গরবে, সাকসেসফুল হবে, না এভয়েট করে ঘুমিয়ে থাকবে। পছন্দ আপনার

Post a Comment

0 Comments