হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি,সফল মানুষের সকালের 6 টি অভ্যাস ,যার সঠিক ব্যবহার করলেই আপনার জীবনে সফলতা আসবেই, আসতে বাধ্য হবে ।আজকে আমি
Hal Elrod – “The miracle morning” – বইটি থেকে সফলতার 6টি গোপন সূত্র আপনাদের সাথে আলোচনা করব। তো চলুন শুরু করা যাক।...
মাত্র ২০ বছর বয়সে Hal Elrod তার কোম্পানির টপ সেলসম্যান হয়ে ওঠেন । তার লাইফের সব কিছুই ছিল একদম পারফেক্ট । কিন্তু একদিন স্পীচ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ তার খুব মারাত্নক এক্সিডেন্ট হয়। ৬ মিনিটের জন্য তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, শরীরের ১১ টি হাড় ভেঙ্গে যায় এবং ৬ দিন তিনি কোমাতে ছিলেন।
ডাক্তাররা তাকে বলেন, উনি আর কোনদিন হাঁটতে পারবেন না এবং তার ব্রেনও ড্যামেজ হয়ে গেছে । কথাগুলো শুনে তিনি কষ্ট পান ঠিকই কিন্তু তিনি মনে করতেন ৫ মিনিটের বেশি নেগেটিভ চিন্তা পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তোলে, তাই তিনি নেগেটিভ চিন্তাগুলো মন থেকে সরিয়ে সামনের কথা ভাবতে থাকেন।
তিনি ভাবলেন, এখন আমি দুইটি কাজ করতে পারি – ডাক্তারের কথা অনুযায়ী সারাজীবন হুইল চেয়ারেই বসে কাটাবো , যদি তাই হয় তাহলে আমি এই হুইল চেয়ারে বসেই হ্যাপি মানুষ হয়ে দেখাবো অথবা ডাক্তারের কথা ভুল প্রমাণিত করে আবার হেঁটে দেখাবো। এই পজিটিভ চিন্তাগুলো তার নেগেটিভ চিন্তাগুলোকে মন থেকে সরিয়ে দেয় । পরবর্তীতে সে মনের শক্তিকে ব্যবহার করে তিনি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ্য হয়ে পড়েন তার সুস্থ হওয়া দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়।
ঐ এক্সিডেন্টের কিছু বছর পর তিনি একজন স্পিকার , বেস্ট সেলিং অথার এবং আলট্রা ম্যারাথন রানার । কী ভাবছেন? ভুল লিখলাম? না, একদম ঠিক লিখেছি, উনি আলট্রা ম্যারাথন রানার যাকে বলা হয়েছিল কোনদিন হাঁটতেও পারবেন না।
কী করে তিনি এই অবস্থানে এলেন? ডাক্তারের কথা ভুল প্রমাণ করলেন ? Hal Elrod বলেন – এর জন্য আপনাকে সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। সকালে যে তাড়াতাড়ি ওঠে তার কাছে প্রচুর সময় থাকে তার কাজগুলো করার জন্য এবং ভালো morning rituals ব্রেন এবং মাইন্ডকে প্রশিক্ষন দেয়।
কোমা থেকে ফিরে আসার পর তিনি 6 টি সকালের অভ্যাস তৈরি করেছিলেন , যা তিনি বিভিন্ন বই পড়ে জেনেছিলেন । চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক সেই অভ্যাসগুলো যা লেখক অনুসরণ করেন।
১। মেডিটেশন বা ধ্যান:-
প্রতিদিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠুন, এরপর ফ্রেশ মাইন্ডে 5 থেকে 10 মিনিট মেডিটেশন করুন। এক গবেষণায় দেখা গেছে পাঁচ মিনিট ধরে মেডিটেশন করলে আমাদের ব্রেনের কার্যক্ষমতা 18 শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর আমরা কি করি, সকালে ঘুম থেকে উঠে সারাদিনের যত নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আনতে থাকি যার ফলে আমাদের সারাদিনটা নেগেটিভ থেকে যায়। তাই সকালে উঠে পজিটিভ চিন্তা করুন এবার নেগেটিভিটি থেকে দূরে থাকুন। মিউটেশনের ফলে আমাদের মন শান্ত হয়ে যায়।আর এক গবেষণায় দেখা গেছে শান্ত মনে যে কোন কাজ আমাদের সাবকনসাস মাইন্ডে সেভ হয়ে যায়। যা আমাদেরকে সফল হতে সাহায্য করে। পৃথিবীর প্রত্যেকটা সফল মানুষই দিনের শুরুতে মেডিটেশন করে।
২। অ্যাফারমেশন বা পজিটিভ বাক্য:
এটি একটি পাওয়ারফুল টেকনিক,এর ব্যবহার প্রত্যেকটা সফল মানুষেরা করে আসছে। অ্যাফারমেশন হচ্ছে একটা পজেটিভ বাক্যকে বারবার বলা, যেমন ধরেন, কোন কাজের শুরুতে মনে মনে নিজেকে বলুন,
আমি পারবো, আমার মধ্যে সে শক্তি রয়েছে, আমাকে সফলতা থেকে কেউ আটকাতে পারবেনা। এভাবে বারবার বলার ফলে এই বাক্যটি আমাদের সাবকনসাস মাইন্ড এ চলে যায়। যার ফলে কাজটা সফল হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়।
৩। ভিজুয়ালাইজেশন বা কল্পনাশক্তি:-
এটা অনেকটাই Affirmation-এর মতই। Affirmation-এ আপনি নিজেকে বারবার নিজেকে পজিটিভ বাক্য বলবেন , Visualization-এ আপনার মস্তিষ্কে এমন কিছু জিনিস তৈরি করতে হবে যা জীবনে অর্জন করতে চান। যেমন ধরুন আপনি কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতে চান, মনে মনে চিন্তা করতে থাকুন, বড় একটা রুমে আপনি বসে আছেন, হাতে দামী ব্র্যান্ডের ঘড়ি অথবা মোবাইল যা আপনি চেয়েছিলেন, আর মুখে হাসি তাহলে আপনার লক্ষ্য অর্জন আরো বেশি সহজ হয়ে যাবে।
৪। এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম:
Exercise বা ব্যায়াম অনেক উপকারী। শরীরচর্চার ফলে আমাদের বডি এবং মাইন্ড সুস্থ থাকে। আর আপনারা তো জানেন একটি হেলথি বডি তে একটি হেলথি মাইন্ড বসবাস করে।
নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে আপনার মস্তিষ্কে অক্সিজেন বেড়ে যায়, এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়। এগুলো করার জন্য আপনার জিমে যাওয়ার দরকার নেই, সকালে ছোট ছোট ব্যায়াম করেই এই উপকারিতা পেতে পারেন।
৫:- বই পড়ুন
বই পড়া বলতে অনেকেই শুধু টেক্সট বই মনে করেন, আসলে তা না। লেখক বইতে নিয়মিত সকালে কোন Self improvement বিষয়ক বই পড়তে বলেছেন, যা আপনার চিন্তাশক্তি, স্কিলস, বুদ্ধিমত্তা বাড়িয়ে তুলবে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি বিল গেটস প্রতি সপ্তাহে একটি বই পড়েন। সুতরাং, এটিও প্রয়োজনীয় অভ্যাস সফলতা অর্জনে।
৬। লিখে রাখুন :
লিখে রাখা বলতে বোঝানো হয়েছে, আপনার লক্ষ্যগুলো প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা খাতায় লিখে রাখুন।
সবসময় নিজের সাথে একটি নোটবুক রাখুন এবং আইডিয়া , চিন্তাগুলো লিখে রাখুন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা তাদের লক্ষ্য গুলো লিখে রেখেছেন, তারাই বেশি সফল হতে পেরেছেন। তাহলে দেরি না করে আজই নিজের লক্ষ্য গুলো লিখে রাখুন।
এসব উপায়গুলো গবেষণায় প্রমাণিত, পৃথিবীর প্রত্যেকটা সফল মানুষেরা এই উপায়ে ব্যবহার করে সফলতা লাভ করেছেন। তাই আর দেরি না করে আপনারা এই উপায় গুলোকে আয়ত্ত করতে শিখুন। আরে হ্যাঁ সকালে এলাম দিতে ভুলবেন না যেন!
2 Comments
চালিয়ে যান,আমরা আপনার সাথে আছি।
ReplyDeleteThanks 👍 bro
ReplyDelete