এই 3 টি গল্প আপনার জীবনকে পুরোপুরি বদলে দিবে । 3 Life Changing motivational post...

 এই 3 টি গল্প আপনার জীবনকে পুরোপুরি বদলে দিবে । 3 Life Changing motivational post...





Story Number 01 ) :- 



জীবন আমাদের অনেক কিছু শেখায়। কখনো হাসায় কখনো কাঁদায় কিন্তু প্রতিটি পরিস্থিতিতে যে খুশি থাকতে জানে জীবন তার কাছে মাথা নত করে। একবার একটি কোচিং এ রাজু নামের একটা ছেলে ছিলো। সে নিজে এতো বেশি খুশি থাকতো যে পুরো কোচিং তার কারণে খুশিতে থাকতো। কিন্তু হঠাৎ করে দশ পনেরো দিন থেকে রাজু অনেক মন খারাপ করে থাকা শুরু করে । সে কারো সাথে কথা বলে না, তার বন্ধু কম হতে থাকে। এটা তাদের ক্লাসটিচার বুঝতে পারে, তারা রাজুকে ডেকে বলে যে কি হয়েছে তোমার? যে তোমার এতো মন খারাপ? তোমার কারনেই তো সবাই খুশিতে থাকতো। তখন রাজু বলে সে একটি মেয়েকে ভালবাসতো আর সেই মেয়েটি তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তাই তার মনে হয় এই জীবনে আর কিছুই নেই‌। রাজু এখন সবসময় পুরনো কথাগুলো মনে করে কষ্ট পায়। সে পুরনো কথাগুলোকে কিছুতেই ভুলতে পারছে না, এটা শুনে টিচার ভাবে তাকে তো বোঝাতে হবে জীবনে খুশিতে কিভাবে থাকতে হয়। টিচার রাজুকে বলে, তুমি সন্ধ্যায় আমার বাড়ি আসবে তোমার সাথে কিছু কথা আছে। সন্ধ্যের সময় রাজু টিচারের বাড়ি যায় তখন টিচার বলে তোমাকে কি একটু জুস দেবো ? রাজু বলে ওকে স্যার ! টিচার জুস তৈরি করার সময় সেখানে চিনি কম দিয়ে লবণ বেশি দিয়ে দেয় । রাজু জুস খাওয়ার সাথে সাথে বলে স্যার এটা কি করেছেন? এতে তো অনেক লবণ এটাতো খাওয়া যাবেনা? তখন টিচার বলে ওকে দাও আমি এটা ফেলে দিয়ে নতুন করে তৈরি করে দিচ্ছি ? তখন রাজু বলে, স্যার এটা ফেলে দেবার দরকার নেই ? একটু বেশি চিনি দিলে এটা খাওয়া যাবে। টিচার বলে, এটাই তো তোমাকে বোঝাতে চাইছিলাম । তোমার জীবনে লবণ বেশি হয়ে গেছে, সেটা তো কম করতে পারবে না কিন্তু চিনি বেশি দেওয়া যাবে। প্রতিটি মানুষের জীবনে এমন সময় অবশ্যই আসবে যখন আমাদের প্রচুর খারাপ স্মৃতি হয় । কিন্তু আমরা স্মৃতিগুলোকে তখনই ভুলতে পারবো যখন আমাদের জীবনে ভালো স্মৃতি আসবে। তাই চেষ্টা করুন , নিজের জীবনের সুন্দর মুহূর্ত বানান। আপনার জীবনে লবণ বেশি হয়ে গেছে প্রয়োজন একটু বেশি চিনি দেওয়া ।


Story Number 02 ):- 



কেবলমাত্র বিশ্বাসের মধ্যেই আছে সেই ক্ষমতা যা পাথরেও ফুল ফোটাতে পারে। রাজু নামের একটা ছেলে ছিলো । গ্রামের মধ্যে সবথেকে ভালো ছেলে ছিলো যার উদাহরণ প্রতিটি মা-বাবা তার ছেলেদের দিতো। পড়াশোনায় রাজু অনেক ভালো ছিলো, তার বাবা- মা তাকে উৎসাহ দিতো আর তারা চাইতো জীবনে বড় কিছু করুক । সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো, কিন্তু রাজু আস্তে আস্তে লোকের উপর রাগা শুরু করে, সে সবার কথায় রেগে যেতে থাকে। যখন জানা গেল এমনটা সে কেন করছে ? তখন দেখা যায় সে টেনসনে ভুগছিলো, সে নিজের ওপর অনেক চাপ অনুভব করছিলো। সে ভাবছিলো জানিনা আমি অতোটা সফল হতে পারবো কিনা যতটা আমি ভাবছি ? বা আমার বাবা-মা যতোটা চাইছে। আর ওই চাপের কারণেই সে এমন ব্যবহার করছে। রাজুর মা অনেক চিন্তায় ছিলো রাজুকে নিয়ে, কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন একজন সন্ন্যাসী তাদের গ্রামে আসবেন । তাই তিনি রাজুকে বলেন যে বেটা তুমি একবার সন্ন্যাসীর সঙ্গে দেখা করো এবং তোমার মনের সমস্ত কথা তাকে বলো। ছেলেটি সেখানে যায় আর সন্ন্যাসীকে বলে যে আমি অনেক চিন্তায় থাকি ? আর আমার মধ্যে অনেক কনফিউশন আছে যে আমি অতোটা সফল হতে পারবো কিনা যতটা আমি ভাবি ? তখন সন্ন্যাসী বলে আমি তোমার কথা বুঝতে পেরেছি।

এই নাও এই তাবিজটি রাখো এটি অনেক শক্তিশালী তাবিজ। এটা যদি তুমি গলায় পড়ে নাও তাহলে তোমাকে সফল হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবেনা। এর ভেতরে অনেক শক্তিশালী মন্ত্র আছে কিন্তু এই মন্ত্রের তাবিজকে সিদ্ধ করার জন্য তোমাকে এক রাত একা শ্মশানে কাটাতে হবে। রাজু এটা শুনে বলে, আমি এক মিনিট সেখানে থাকতে পারবো না আর আপনি সারারাত সেখানে থাকার কথা বলছেন ? তখন সন্ন্যাসী বলে, ভয় পেয়ো না এই তাবিজটি তোমাকে সবদিক থেকে রক্ষা করবে । রাজু এমনটাই করে সে তাবিজ নিয়ে সারা রাত শ্মশানে কাটায়। সে বিশ্বাসই করতে পারছিলো না যে সে সেটা করেছে ? শেষে সন্ন্যাসীকে এসে বলে, যে সত্যিই আপনার এই তাবিজ চমৎকারী ! আমি এর জন্য ওখানে সারারাত ছিলাম আর আমি একটুও ভয় পাইনি‌। সন্ন্যাসী বলে এবার এই তাবিজ তোমার গলায় পড়ে নাও তুমি অনেক সফল হবে । তুমি যা চাইবে তাই পাবে জীবনে । এরপর রাজু তার কাজ করা শুরু করেন, দেখতে দেখতে সে অনেক সফলও হয়ে যায় । তিন বছর পর যখন সে জানতে পারে ওই সন্ন্যাসী তাদের গ্রামে আবার আসছেন ! তখন রাজু ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য সেখানে যায়। যাবার পর রাজু সন্ন্যাসীকে প্রণাম করে ধন্যবাদ দিয়ে বলে যে, এই তাবিজের কারণে সে কতোটা সফল হয়েছে। এরপর সন্ন্যাসী বলে তাবিজটা একবার দেখি, রাজু তাবিজটি সন্ন্যাসীর হাতে দেয়। সন্ন্যাসী রাজুর সামনে ওই তাবিজটা খোলে, রাজু দেখে অবাক হয়ে যায় যে তার ভিতরে তো কিছুই ছিলো না ! সেটা তো খালি একটি তাবিজ। রাজু সন্ন্যাসীকে বলে, যদি এর মাঝে কোন মন্ত্র ছিল না তাহলে এটা এতো কাজ কিভাবে করেছে ? কিভাবে আমাকে এতোটা সফল করেছে ? তখন সন্ন্যাসী বলে, এই তাবিজ নয় তোমার ভিতরে শক্তি, তোমার বুদ্ধি, তোমার পরিশ্রম তোমাকে সফল করেছে । পার্থক্য শুধু এইটুকু যে তুমি তোমার উপর বিশ্বাস করার পরিবর্তে তাবিজের উপরে বিশ্বাস করেছো । রাজুর মতো আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক আছে যারা হাতে অনেক আংটি ও গলায় তাবিজ পড়ে ঘোরে। আর তার মনে হয় এই সমস্ত কিছুর কারণেই সে ভালো কিছু করছে । কিন্তু বিশ্বাস করুন আপনি যাই কিছু করছেন সবকিছু আপনার কাজ, আপনার ট্যালেন্টট, আপনার পরিশ্রম এর জন্য । কোন তাবিজ বা আংটি আপনাকে সফল করতে পারবে না ! নিজের উপর বিশ্বাস থাকলেই আপনি বড় কিছু করতে পারবেন তাই আজ থেকে নিজেকে প্রমিস করুন কোন বাইরের জিনিসকে নয় নিজের ভেতরের শক্তিকে বিশ্বাস করবেন ও জীবনে বড় কিছু করে দেখাবেন।



Story Number 03 ):- 



আপনি কি সব সময় মন খারাপ করে থাকেন ? আপনার কি মনে হয় আপনার কাছে কিছুই নেই? তাহলে আজকের গল্পটি আপনার জন্য ।

একবার একটি রাজা, তার কাছে সবকিছু ছিলো, সে যা চায় তাই পেয়ে যেতো, সে আদেশ করলে সব হয়ে যেতো, রাজা একদিন তার সভা শেষ করে বাসার দিকে যাচ্ছিলো, তখন তিনি দেখেন সেখানে একটি চাকর, যে ঘর পরিষ্কার করছে, সে কাজ করতে করতে গান গাইছে, সে অনেক খুশিতে আছে রাজা এটা দেখে চিন্তায় পড়ে যায় ! রাজা নিজের ঘরে এসে রানী কে বলে যে , আমি অনেক চিন্তায় আছি। আমি দেখলাম, আমার একটা চাকর সে অনেক খুশিতে আছে। তার কাছে তো কিছুই নেই কিন্তু আমার কাছে এতো কিছু থাকার পরেও আমি খুশিতে নেই ! তখন রানী বলে, রাজামশাই এটাতো অনেক ছোট ব্যাপার। আপনি একটা কাজ করুন ওই চাকরকে নিরানব্বইয়ের জামাতে শামিল করে নিন। রাজা বললো, সেটা কিভাবে ? রাণী বললো, আপনি কাউকে বলে ওই চাকরের বাড়ির সামনে একটি থলেতে করে নিরানব্বইটি সোনার কয়েন দিয়ে দিন। রাজা তাই করলো, রাত্রে অন্য একটি চাকরকে দিয়ে ওই চাকরের ঘরের সামনে একটি থলে রেখে দিলো যেখানে নিরানব্বইটি কয়েন ছিলো ‌। চাকরের স্ত্রী সকালে দরজা খুলে দেখে সামনে একটি থলে আছে, চাকর ও তার স্ত্রী মিলে কয়েন গুলো গুনতে থাকে। তারা অনেক খুশি কিন্তু তারা দেখে সেখানে নিরানব্বইটি কয়েন আছে ! আর একটা কয়েন কোথায় ? যে রেখেছে সে তো একশটাই রাখবে 99 টা কেন রাখবে ? সে ভাবে হতে পারে রাস্তায় পড়ে গেছে ? চাকরটি সমস্ত জায়গায় খোঁজে কিন্তু কয়েন সে পায়নি। এখন 100 নম্বর কয়েনের খোঁজে সে তার স্ত্রীকে প্রমিস করে যে তুমি অপেক্ষা করো আমি একটা কয়েন অবশ্যই নিয়ে আসবো । আমি অনেক কাজ করবো, রাজা মশাইকে খুশী করে দেবো, আর একটি কয়েন আমি অবশ্যই নিয়ে আসবো। এরপর রাজা চাকরকে দেখে, সে অনেক চিন্তায় থাকে ! কাজ তো করে কিন্তু তার মন খারাপ থাকে। এরপর রাজা পুনরায় রাণীর কাছে গিয়ে বলে আজ দেখলাম চাকরটি অনেক মন খারাপ কিন্তু এটা কিভাবে হলো ? তখন রানী বলে, সে এখন নিরানব্বইয়ের জামাতে চলে এসেছে, ও যতক্ষণ 100 নম্বর কয়েনটাকে না পাবে সে চিন্তাতেই থাকবে ? সে গান গাওয়া ভুলে গেছে।

 আপনার ও আমার জীবন এমন নয় যে কিছুই নেই ? অনেক কিছু আছে যার কারণে আমরা খুশিতে থাকতে পারি । আমাদের পরিবার আছে, আমাদের বন্ধু আছে, কিন্তু আমরা তার মূল্য বুঝিনা ! আমাদের মনে হয় যে, তারা আমাদের আপনজন, এরা তো আছেই ,এরা কোথায় যাবে ? আর আমরাও 100 নম্বর কয়েনের খোঁজে চিন্তায় আছি । আজ আমাদের কাছে যা আছে তার মূল্য কি আমরা বুঝতে পারছি না ! কিন্তু আমরা ভুলে যাচ্ছি এই পৃথিবীতে সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী। তাই যতক্ষণ আপনার কাছে আপনার পরিবার আপনার আপন জন আছে তাদের মূল্য দিন। আর 100 নম্বর কয়েনের খোঁজ করা বন্ধ করুন। আপনার কাছে যা আছে , যতোটা আছে সেটাকে নিয়েই খুশি থাকার চেষ্টা করুন ।



Post a Comment

0 Comments